‘এক্সট্র্যাকশন’ নিয়ে বিতর্ক: হলিউড বাণিজ্য ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি!

অস্ত্র, মাদক ব্যবসা আর গ্যাংস্টার সংস্কৃতিকে বিবেচনায় নিয়ে যদি কোনো দেশের খুন বা হত্যার হার নির্ণয় করা হয় তাহলে জাতিসংঘ প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী জনসংখ্যা অনুপাতে যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি সে দেশগুলোর ধারেকাছেও নেই বাংলাদেশ। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে অন্য মহাদেশে অবস্থিত সেসব দেশে মাদকসম্রাটরা হেলিকপ্টার, এয়ারক্রাফট এমনকি সাবমেরিন পর্যন্ত ব্যবহার করে। মাদকের জগতে এসব মহাপ্রতাপশালী সাম্রাজ্য ফেলে সম্প্রতি হঠাৎ হলিউড পরিচালক স্যাম হারগ্রেভের নজর পড়ে বাংলাদেশের ঢাকার ওপর, বানালেন-এক্সট্রাকশন। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্ত হওয়া এ মুভিটি দেখে যে কোনো দর্শক, যিনি কখনো বাংলাদেশে আসেননি, সহজেই নতুন এক মাদক সাম্রাজ্যের সঙ্গে পরিচিত হবেন। বাংলাদেশ নামক এই মাদক গডফাদারদের নিয়ন্ত্রিত সাম্রাজ্যে কঙ্কালসার অর্ধনগ্ন শিশুরা স্কুলে না গিয়ে একে-৪৭ বা অটোমেটিক সাবমেশিনগান নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। ঘিঞ্জি বস্তির শহর ঢাকার রাস্তায় পুলিশ, এলিট ফোর্স এমনকি সেনাবাহিনীও মাদক মাফিয়াদের আদেশে মুহুর্মুহু গুলিবিনিময় করে সাধারণ মানুষ হত্যা করার জন্য। সিনেমার এই রূপকথাময় বীভৎস বার্তায় যেন বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে- এ অন্ধকার নৈরাজ্যময় দেশে দুঃস্বপ্নেও কোনো দিন কেউ যেন ভ্রমণ বা বিনিয়োগের কল্পনা না করেন। আর কিছু আত্মসম্মানহীন বাংলাদেশি কুশীলব বাংলাদেশের গায়ে এ কালিমা লেপনকারী প্রযোজনায় জড়িত থাকতে পারার অহংকার প্রকাশ করছেন সোশ্যাল মিডিয়া বা টেলিভিশনের ইন্টারভিউতে। হলিউডি প্রযোজনায় নিজের নাম সংযুক্ত করেছেন বলে কথা, হোক না তা স্বদেশবিদ্বেষী!
গতানুগতিক অ্যাকশনধর্মী এ ছবিটি পরিচালনা করেছেন হলিউডি পরিচালক স্যাম হারগ্রেভ, যা নেটফ্লিক্সে রিলিজ হয় গত ২৪ এপ্রিল। ছবিতে মুম্বাইর এক জেলবন্দী ড্রাগলর্ডের ছেলে অভিকে কিডন্যাপ করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিডন্যাপের হোতা ঢাকার আরেক ডাকসাইটে মাদকসম্রাট আমির আসিফ। ছেলেকে উদ্ধারের জন্য নিজের সহযোগী সাজুকে (রণদ্বীপ হুদা) চাপ ও হুমকি দেন মুম্বাইর সেই গডফাদার। এ পরিস্থিতিতে সাজু উদ্ধার অপারেশনের জন্য অস্ট্রেলিয়ান এক মার্সেনারি সোলজার টেইলার (ক্রিস হেমসওয়ার্থ)-কে নিয়োগ দেন অর্থের বিনিময়ে। পরবর্তীতে সাজু আর টেইলার মিলে ব্যাপক সংঘর্ষ- তথা অ্যাকশন, ভায়োলেন্স আর সাসপেন্সের ভিতর দিয়ে অভিকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করেন নিজেদের জীবনের বিনিময়ে। মোটা দাগে এই হচ্ছে ছবির ঘটনা।

SHARE THIS

Author:

Previous Post
Next Post